1. shahinit.mail@gmail.com : admin :
  2. newspriyorupganj@gmail.com : Mahbub Alam Priyo : Mahbub Alam Priyo
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ অপরাহ্ন

মাছের আঁশে স্বপ্ন দেখেন কুমিল্লার মাহবুব

ডেস্ক রিপোর্ট | টাইমসপিপল২৪ডটকম:
  • প্রকাশ কাল | শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ২৯২ পাঠক

দুর্গন্ধযুক্ত মাছের আঁশকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য এতদিন ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এখন তা আশীর্বাদ হিসেবে দেখা দিয়েছে কুমিল্লার মাহবুবের কল্যাণে। মাছের আঁশের ভেতরই আগামীর সুখ স্বপ্ন দেখেন এই তরুণ। উচ্ছিষ্ট মাছের আঁশ একদিন পরিপূর্ণ একটি শিল্পের মর্যাদা পাবে সেই আশা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন বুনছেন মাহবুব। কুমিল্লার এই মাছের আঁশ এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রপ্তানি হচ্ছে সুদূর চীনে। আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা, ভূমিকা রাখছে কর্মসংস্থানে।

কুমিল্লা নগরীর ১৬নং ওয়ার্ডের সংরাইশ এলাকার ইয়াকুব আলীর সন্তান মাহবুব। বাবা-মার চার ছেলে মেয়ের মধ্যে মাহবুব সবার বড়। গত বিশ বছর ধরে তিনি কুমিল্লার রাজগঞ্জ বাজারে মাছ কাটেন আর দশ বছর ধরে মাছের আঁশের ব্যবসা করেন। এখন তার দেখাদেখি আরো কয়েকজন এই মাছের আঁশের ব্যবসা শুরু করেছেন।

মাহবুব জানান, একদিন ঢাকায় দেবদূতের ন্যায় দেখা হলো এক ব্যবসায়ীর সাথে। তিনি জানালেন, মাছের আঁশগুলো বাসা বাড়ি কিংবা বাজার থেকে সংগ্রহ করে শুকিয়ে আমাকে দিলে আমি কেজি প্রতি তোমাকে ৪০ টাকা দেব। এ কথা শুনে কুমিল্লা এসে একটি পাত্র নিয়ে সকালেই চলে গেলাম রাজগঞ্জ বাজারে। বাজারে দুপুর পর্যন্ত থেকে মাছের আঁশ সংগ্রহ করে ঝাকুনীপাড়া সংলগ্ন এই গোমতী নদীর পাড়ে শুকিয়ে ঐ ব্যবসায়ীকে দিলাম ৬ কেজি মাছের আঁশ। তিনি আমাকে ৪০ টাকা ধরে ২৪০ টাকা দিলেন নগদ। এতে আমার আস্থা এবং উৎসাহ বেড়ে গেল। পণ করলাম পেশা হিসেবেই গ্রহণ করব মাছের আঁশ সংগ্রহ করাকে।

এরপর থেকে কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ, চকবাজার, রানীর বাজার, টমছমব্রিজ, বাদশা মিয়ার বাজার,পদুয়া বাজার চৌয়ারা বাজার, ক্যান্টনমেন্ট বাজারসহ নানা বাজারে লোক নিয়োগ করি। আমার এ কাজে আমাকে ছয়জন সহযোগিতা করেন। যারা প্রত্যেকেই মাসিক বেতনভুক্ত। আমার এই সহযোগীরা বিভিন্ন বাজার থেকে মাছের আঁশ সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন আর আমি তা শুকিয়ে প্রস্তুত করি। ঢাকার পাইকাররা আমার বাড়ি এসে প্রতি মাসে এই মাছের আঁশ নিয়ে যান। মাসে গড়ে আমি ৬০০ কেজি মাছের আঁশ শুকিয়ে বিক্রির উপযোগী করতে পারি।

মাছের আঁশ সংগ্রহ করতে মাছ কাটাদের কোন টাকা দিতে হয় কিনা জানতে চাইলে মাহবুব জানান, প্রথম প্রথম দিতে হতো না। কিন্তু যখন জানতে পারল এটা দিয়ে আমি ব্যবসা করি, তখন তো স্বাভাবিক কারণেই তাদেরও একটা দাবি থেকে যায়। এখন এটা ওপেন ব্যবসা। তাদের আমি টাকা দেই। তারাও নির্দিষ্ট একটি পাত্রে রেখে দেয়। আমার লোকজন গিয়ে নিয়ে আসে। কুমিল্লার বাদশা মিয়া বাজারের বাদশা আর চান্দিনার আরেকজনও আমার মতো এই ব্যবসা করেন।

এই মাছের আঁশ দিয়ে কি করে জানতে চাইলে মাহবুব বলেন, আসলে কি করে আমি কখনো পাইকারদের কাছে জানতে চাইনি এবং তারাও আমাকে বলেনি। তবে এতটুকু জানি এগুলো চীনে রপ্তানি হয় এবং এগুলো দিয়ে মানব দেহের মূল্যবান উপকরণ তৈরি হয়।

মাছের আঁশে আপনার স্বপ্ন কি জানতে চাইলে মাহবুব বলেন, প্রথম প্রথম এলাকার মানুষ আমাকে অন্য চোখে দেখত। ঘৃণা করত। বলত, ছিঃ যেই মাছের আঁশ আমরা ডাস্টবিনে ফেলে দেই আর সেগুলো সে বাড়ি এনে শুকায়। এখন যখন দেখছে, স্বল্প পুঁজিতে ব্যবসা বেশি তখন অনেকেই আগ্রহী হতে শুরু করেছে।

এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন বলেন, মাছের আঁশ শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানি করার কথাটি শুনেছি। আমি আমার লোক দিয়ে মাহবুবকে অফিসে এনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেব যাতে সে আরো সঠিক ভাবে এই কাজটি করতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই পাতার আরো খবর

Timespeople24.com © All rights reserved-2021| Developed By

Theme Customized BY WooHostBD
RSS
Follow by Email