টাইমস পিপলস নিউজ ডেস্কঃ
সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মী এখনও ব্যবসায়ী রাকিব হাসানের স্ত্রী। সেই হিসেবে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী পরিচয় দেওয়া তামিমা যে বিয়ে করেছেন সেটি অবৈধ। এমনটাই প্রমাণ পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তে ক্রিকেটার নাসির হোসেন, তামিমা সুলতানা তাম্মী ও তামিমার মা সুমি আক্তারকে দোষী উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তামিমা রাকিবকে তালাক দেননি। আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিশও পাননি। তামিমা উল্টো জালিয়াতি করে তালাকের নোটিশ তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেওয়ার ফলে তামিমা তাম্মী এখনও রাকিবের স্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন। দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তাম্মীর বিয়ে অবৈধ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পিবিআই সদরদপ্তর সূত্র জানায়, রাকিবের করা মামলায় আজ সকালে তিনজনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পিবিআই। প্রতিবেদনে মোটাদাগে উল্লেখ করা হয়েছে- ডাকযোগে তালাকের যে পত্র পাঠানো হয়েছিল তার রিসিটটি সঠিক নয়। তালাক যথাযথভাবে হয়নি জেনেও বিয়ে করেছিলেন নাসির। এ কারণে তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তালাক হয়নি জানা সত্ত্বেও তালাকের তথ্য প্রচার করায় মানহানির ধারাও রয়েছে নাসির হোসেন, তামিমা সুলতানা তাম্মী ও তার মা সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে।
এর আগে ডিভোর্স পেপার ছাড়াই অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য বিচারক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার প্রথম স্বামী মো. রাকিব হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ওই দিনই আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর শুনানি শেষে বিকেলে আদালত মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্রপত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকা অবস্থায় তামিমা নাসিরকে বিয়ে করেছেন, যা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। নাসির তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
‘তামিমা ও নাসিরের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার আট বছর বয়সী শিশুকন্যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। আসামিদের এ ধরনের কার্যকলাপে রাকিবের চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। এমতাবস্থায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৯৪/৪৯৭/৪৯৮/৫০০ ও ৩৪ ধারায় অপরাধের অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ দানে আদালতের মর্জি হয়।’